সাহিত্যিকা

রাণী (দে) চন্দ, রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্যা লেখিকা ও শিল্পী

রাণী (দে) চন্দ, রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্যা লেখিকা ও শিল্পী
@অগ্নিমিত্র ভট্টাচার্য্য, ১৯৮১ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং

প্রথম আলাপেই অসীমদা জানতে চাইল যে আমার লেখা-লেখি করবার অভ্যাস আছে কিনা। আর মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক নারীদিবস উপলক্ষ্যে আমাদের বিই কলেজ / বেসু / আইআইইএসটি’র মাসিক পত্রিকা সাহিত্যিকার বিশেষ সংখ্যায় আমি কিছু লিখতে পারি কিনা। যখন জানালাম যে রবিঠাকুর হলেন আমার লেখার প্রিয় বিষয়, অসীমদার অনুরোধ ছিল রবীন্দ্রনাথের রচনায় নারী চরিত্রের বিশ্লেষণ সম্পর্কিত কোন লেখা ভাবা যায় কিনা।

ভাবতে বসে দেখলাম, রবীন্দ্রনাথ সৃষ্ঠ নারীচরিত্রের ব্যখ্যা ও বিশ্লেষণ অনেক দেশী ও বিদেশী পন্ডিতেরা বহুকাল ধরে প্রগাঢ় প্রজ্ঞার সাথে করে এসেছেন, সেখানে নাক গলানো আমার পক্ষে অত্যন্ত ধৃষ্টতা ও মূর্খতার পরিচায়ক হবে! ভাবতে ভাবতে হঠাৎই রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর স্নেহধন্য বহু নারীদের মধ্যে থেকে একটি চরিত্রের আখ্যান মনের মধ্যে ভেসে উঠল যা আমাদের কেবল শুধু একজন সাধারণ নারীর প্রতি রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়কই হবে না, সেই সাথে দ্বার খুলে দেবে এক আটপৌরে নারীর জীবনপথে উত্তরণের অবিশ্বাস্য সত্য কাহিনীর, যেখানে গুরুদেবের সোনার কাঠির পরশে এক মাটির টুকরো পরিবর্তিত হয়ে উঠেছিল হীরকখন্ডে। সেই বহুপঠিত কাহিনী আজ আবার নিবেদন করছি নতুন পাঠককুলের জ্ঞাতার্থে।

মাত্র চার বছর বয়সে পিতৃহারা একটি মেয়ের জীবনকাহিনী। বিধবা মা ও পাঁচ সন্তানের সংসার। অকালমৃত পিতার সাথে কবির পরিচিতি ছিল এবং শান্তিনিকেতনে জমি কিনে রবীন্দ্র সান্নিধ্যে ও কবির বিশাল কর্মকাণ্ডের পরিমণ্ডলের মাঝে জীবন কাটিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু নিয়তির পরিহাসে তার সে স্বপ্ন সফল হয়নি। বড় ছেলেটি কবির সহায়তায় শান্তিনিকেতনে অঙ্কন শিক্ষা শেষে বিদেশের আর্ট কলেজে সাফল্য লাভ করে কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের ‘ অধ্যক্ষ হয়ে ছোট দুই বোনদের গ্রাম থেকে নিজের কাছে এনে রেখেছেন শুনে কবি কলকাতা এসে দু’বোনকে তাঁর আশ্রমে নিয়ে এলেন।

বড় বোনের ছিল গানের গলা, তাকে কবি দিলেন সঙ্গীতে আর অবসর সময়ে হাতের কাজ শিখতে।
আর ছোট মেয়েটির কথা তাঁর নিজের মুখেই শোনা যাক–
“গুরুদেব বললেন, পড়ে পাস করে কি করবি? অঙ্ক অ্যালজাব্রা তোর কোন্ কাজে লাগবে? ইতিহাস ভূগোল যেটুকু দরকার, আপনা হতেই জেনে যাবি। বাংলা মাতৃভাষা, এমনিতেই শিখে ফেলবি। আর ইংরাজি? তা আমিই শিখিয়ে দেব। তোর ছবির দিকে ঝোঁক— ছবিতেই মনপ্রাণ দিয়ে লেগে যা। আর সময় নষ্ট করিস নে।”

সেই শুরু দুই বোনের শিক্ষাধারা। তারা জানে গুরুদেব সততই আছেন তাদের পাশে, কথায় কথায় তাঁর কাছে ছুটে যাওয়া, আবদার করা, ভালো কিছু পেলে, ভালো কিছু শুনলে, তাঁকে বলতে যাওয়ার দ্বার তাঁদের কাছে সর্বদাই উন্মুক্ত। আশ্রমের সকল সুখ দুঃখের সমান অংশীদার কবি। কোথাও এতটুকু অসন্তোষ বা বিরূপতার আভাস তিনি নিজের হাতেই পরিস্কার করে দিতেন — দানা বেঁধে উঠবার আগেই।

এইভাবেই দিন কাটছিলো। এরই মাঝে মেয়েটির শিল্পী দাদা আশ্রমে জমি কিনে বাড়ী করে মা এবং ছোট ভাইকে নিয়ে এসেছেন আর মেয়েটিও শ্রীভবনের হোস্টেল ছেড়ে আশ্রমের অদূরেই নিজের বাড়িতে পরিবারের সাথে বাস করছে। এমন সময় গুরুদেবেরই একান্ত উদ্যোগে মেয়েটির দিদির বিবাহ হল শ্রীনিকেতনের ভারপ্রাপ্ত শ্রী গৌরগোপাল ঘোষের সাথে। সাত বছর বয়সে, ফুটফুটে গায়ের রঙ গৌর এসেছিলেন আশ্রমে, কবি তাকে বরাবর আদর করে ডাকতেন ‘গোরা’ বলে। দিদির বিয়ের পর মেয়েটির মা অসুস্থ হলে, মা’কে নিয়ে মেয়েটি কলকাতায় গেল, তাঁর শিল্পী দাদার বিবাহ হল, আর কয়েক মাস পরে মেয়েটি আবার ফিরে এল আশ্রমে।

এবার সামান্য প্রসঙ্গান্তরে যাই। ইতিমধ্যে একসময়ে বিশ্বভারতীর উত্তর বিভাগের ছাত্র শ্রী অনিল কুমার চন্দ তখন লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স থেকে পাস করে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত সচিব পদে নিযুক্ত হয়েছেন। আর রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ শ্রীমতী প্রতিমা দেবী শ্রী অনিল চন্দের সাথে মেয়েটির বিবাহের প্রস্তাব এনেছেন। দু’পক্ষের সম্মতির পর মেয়েটি কলকাতায় ফিরে গেল। এদিকে একসময়ে তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণে মনোমালিন্য জমাট বাঁধল দুপক্ষের অভিভাবকদের মধ্যে। এবং এই বিবাহ প্রায় পন্ড হবার পরিস্থিতিতে পর্যবসিত হল। তবে একথা বলাই বাহুল্য যে হবু পাত্র ও পাত্রীর এই বিয়েতে সর্বপ্রকার সম্মতি ছিল।

এর পরবর্তী ঘটনার বিবরণ মেয়েটির জবানবন্দীতেই শোনা যাক–
“গুরুদেব আশ্রমের জন্য টাকা তুলতে অভিনয়ের দল নিয়ে বর্ধমান স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষা করছিলেন; গোপন পরামর্শ মতো উনি (শ্রী অনিল চন্দ) আমাকে নিয়ে সোজা চলে এলেন গুরুদেবের কাছে। বিবাহ নিয়ে গোলমালের কথা গুরুদেব শুনেছিলেন আগেই।

খানিক পরেই হাওড়া হতে বোম্বে মেল এল। দলের সাথে আমরাও উঠে পড়লাম তাতে। কিছুক্ষণ গুরুদেবের কামরায় তার কাছে বসে রইলাম। গুরুদেবের কামরার পাশের কামরায় দিন্ দা (শ্রী দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর) ছিলেন, মেয়েরাও কয়েকজন ছিল; পরে আমিও রইলাম সেইসঙ্গে।

পুরুষোত্তম ত্রিকোম দাসের স্ত্রী বিজুবেন তখন কলাভবনের ছাত্রী, বিজুবেনও চলেছেন এইসঙ্গে। বোম্বেতে তার বাড়ি। বোম্বে স্টেশনে নেমে গুরুদেব আমাকে পাঠিয়ে দিলেন বিজুবেনের সাথে তাঁর বাড়িতে। দিন্ দা, নন্দদা (শ্রী নন্দলাল বসু), ক্ষিতিমোহনবাবু ও ওঁকে (শ্রী অনিল চন্দ) নিয়ে গুরুদেব গেলেন টাটা প্যালেসে; সেখানেই তিনি থাকবেন। দলের বাদবাকি সবার থাকবার ব্যবস্থা হয়েছে অন্যত্র, টাটা প্যালেস হতে কিছুটা দূরে শহরের ভিতরে।

আমি সারাদিন বাজার ঘুরে শহর দেখে বিজুবেনের সঙ্গেই কাটিয়ে দিলাম। এই যে এমন করে চলে এসেছি কাউকে না বলে-কয়ে—- ভয় ভাবনা কিছুই হয়নি তেমন। গুরুদেবের কাছে এসে গিয়েছি আর আমার ভাবনার কি থাকতে পারে। আজ বুঝতে পারি এ নিয়ে কতটা ভাবতে হয়েছিল গুরুদেবকে। আমরা তো অবুঝের মতো কাজ করে বসে আছি; ভালোমন্দের কত দায়িত্ব পড়েছিল সেদিন তাঁর উপরে। কিছু মনেই জাগে নি সে-সব তখন; পরম নিশ্চিন্ত নিরাপদ মনে হয়েছে নিজেকে।

সন্ধেবেলা খবর এল বিজুবেনের কাছে আমাকে নিয়ে টাটা প্যালেসে যেতে। গুরুদেব ডাকছেন।

টাটা প্যালেসে বিরাট বসবার ঘর, মেঝেজোড়া পুরু কার্পেট, বাতি-ঝলমল দেয়াল, গুরুদেব বসে আছেন সেখানে সোফার উপরে। পরনে গরদের ধুতি, পাঞ্জাবি, চাদর; গলায় জুঁইয়ের লম্বা গোড়ে মালা। অপরূপ রূপ। যেন আলো ছড়িয়ে বসে আছেন। ঘরে সরোজিনী নাইডু, নন্দদা, ক্ষিতিমোহন ঠাকুরদা, উনি (শ্রী অনিল চন্দ) ও হরেন ঘোষ মশায়। গুরুদেব আমায় বললেন, যাও একটু সেজে এসো।

পাশে লেডী টাটার সুইট, গুরুদেবের জন্য সাজানো হয়েছিল এটি। গুরুদেব এখানে না থেকে ওদিককার অপেক্ষাকৃত ছোট ঘরটাই বেছে নিলেন, বললেন অত বড় ঘরে আমি হারিয়ে যাই। এ আমার সেক্রেটারির জন্যই থাকুক।

সেই ঘরে এলাম। কি আর সাজব, শাড়িটা বদলে নিলাম শুধু, আর খোঁপায় ছড়ালাম ফুলের মালা একছড়া, বিজুবেন দিয়েছিলেন আসবার সময়। সেজে এ ঘরে এলাম। গুরুদেব সোফা থেকে উঠে এসে মেঝেতে কার্পেটের উপর বসলেন জোড়াসন হয়ে। আমাদের দুজনকে বসালেন তাঁর সামনে পাশাপাশি। গুরুদেব আগে হতেই বোধ হয় বলে ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন, আমার পাশে বসলেন নন্দদা, কন্যাপক্ষ; ওঁর পাশে বসলেন ক্ষিতিমোহন ঠাকুরদা, বরপক্ষ। সরোজিনী নাইডু বসলেন একাই সভাসদ্ হয়ে। হরেন ঘোষ মশায় রইলেন দরজায় প্রহরী কেউ যাতে এখন না আসে ভিতরে।

গুরুদেব মন্ত্র পড়তে লাগলেন বৈদিক বিবাহের। আজও সে ধ্বনি কানে আসে। তন্ময় হয়ে শুনছি গুরুদেবের কন্ঠে সে মন্ত্রধ্বনি। আমারই যে বিয়ে সে খেয়ালই ছিল না। গুরুদেব বললেন, বলো।

বুঝতে পারি নি আমায় বলছেন। চুপ করে আছি যেমন ছিলাম। গুরুদেব বললেন, বলো আমার সঙ্গে তুমিও বলো রানী।

গুরুদেব আমাকে মন্ত্র পড়ালেন। ওঁকে মন্ত্র পড়ালেন। নিজের গলার মালা খুলে আমাদের মালাবদল করালেন। ক্ষিতিমোহন ঠাকুরদাকে নন্দদা বললেন, আপনারা এবারে স্বস্তিবচন উচ্চারণ করুন।
তাঁরা ‘স্বস্তি স্বস্তি স্বস্তি’ বললেন।

গুরুদেবকে প্রণাম করলাম। তিনি আশীর্বাদ করলেন। যাঁরা ছিলেন ঘরে তাঁদের প্রণাম করলাম, আশীর্বাদ পেলাম।
গুরুদেব সোফায় বসতে বসতে বললেন, চলো এবার নেমন্তন্ন খেতে।
তার সঙ্গেই গেলাম বোম্বের মেয়রের পার্টিতে। আমাদের দলের সবাই আছেন সেখানে, সকলেরই নিমন্ত্রণ।বোম্বের গন্যমান্য আরো বহু নিমন্ত্রিত ব্যক্তি উপস্থিত। গিস্ গিস্ করছে হল। শান্তিনিকেতনের সবার কৌতূহলি দৃষ্টি আমার উপরে। কেউ জানে না ভিতরের কি ব্যাপার? সবাই এ নিয়ে কানাকানি করছে; আমি সে-সব বুঝিনি তখন কিছু। একটু লজ্জা, একটু কুন্ঠা, একটু ভালোলাগা— সব মিলিয়ে একটু বুঝি-বা জড়ো ভাবই ছিল। কিন্তু যাঁর ভাবনা তিনি তখন ভাবছেন কি করে এই বিবাহের কথা প্রচার করা যায়।

গুরুদেবের কাছাকাছিই বসে ছিলাম। সরোজিনী নাইডুর বোনেরা ও আরো অনেকে গুরুদেবকে ঘিরে আনন্দ উল্লাস করছেন। গুরুদেব হেসে বলে উঠলেন, আমাকে নিয়ে কেন এত মাতামাতি করছ। ঐ দেখ নব-বিবাহিত দম্পতি বসে, তাঁদের কাছে যাও।
তাঁরা ইশারা বুঝলেন। হৈ-হৈ করে আমাদের ঘিরে ফেললেন। সদ্য বিবাহিত আমরা, আমাদের নিয়ে আবেগে উচ্ছাসে সে যায়গা মাতিয়ে তুললেন। সবাই জানলেন, গুরুদেব নিজে প্রচার করলেন এরা বিবাহিত। কাগজের রিপোর্টাররা খবর লুফে নিল। পরদিন বোম্বের ও বাংলাদেশের ইংরাজী, বাংলা সংবাদপত্রে খবর বেরিয়ে গেল, আত্মীয় অনাত্মীয় সকলে জানল বোম্বে শহরে অমুকদিন অমুকস্থানে গুরুদেব নিজে পৌরোহিত্য করে আমাদের বিবাহ দিলেন।”

আশা করছি, মাননীয় পাঠক/পাঠিকাদের কাছে এতক্ষণে নিশ্চই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সেদিনের সেই অতি সাধারণ মেয়েটির পরিচয়। ইনি বিখ্যাত চিত্রশিল্পী মুকুল দে’র বোন শ্রীমতী রানী চন্দ। সর্বগুণসম্পন্না এই নারী রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর ১৯৪২ সালে ইংরাজ বিরোধী “ভারত ছাড়ো” আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেছেন। ১৯৪৮ সালে দেশের প্রথম মহিলা শিল্পী হিসাবে দিল্লী ও মুম্বাইতে একক চিত্রপ্রদর্শনী করেছেন। তাঁর চিত্রকর্ম দিল্লীর রাষ্ট্রপতি ভবন সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের রাজভবন অলঙ্কৃত করেছে। সংগীত ও নৃত্যাভিনয়ে পারদর্শী রানী চন্দ কবির সাথে দেশে-বিদেশে অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন। স্বামী অনিল চন্দ কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সাথে ১৯৫৫ সালে পূর্ব ইউরোপ ও তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া ভ্রমণ করেন।

রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণা ও নির্দেশে তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন এবং কবির রোগশয্যায় তিনি ছিলেন মুখে মুখে রচনাগুলির অনুলিপিকার। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী ও স্মৃতিকথা যথাক্রমে ‘জোড়াসাঁকোর ধারে’ এবং ‘ঘরোয়া’ তাঁরই অনুলিখন। ১৯৫৪ সালে তাঁর ‘পূর্ণকুম্ভ’ গ্রন্থের জন্য তিনি রবীন্দ্র পুরষ্কারে ভূষিত হন। তাঁর সাহিত্য কীর্তির জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘ভুবনমোহিনী স্বর্ণপদক এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ডি-লিট উপাধি প্রদান করে। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলি ‘আলাপচারী রবীন্দ্রনাথ’ , ‘গুরুদেব’, ‘সব হতে আপন’ ও আরো বহু রচনা বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। তাঁর জেল জীবনের অভিজ্ঞতা-পুষ্ট রচনা ‘জেনানা ফটক’ ভারতে ইংরাজ শাসনের এক ঐতিহাসিক দলিল।

আজ থেকে প্রায় ৯১ বছর আগে, ১৯৩৪ সালে রানী ও অনিল চন্দের বিবাহ অনুষ্ঠিত হয় কবির বয়স তখন ৭৩ বছর। চিরতরুণ কবি দুই যুবক যুবতীর অন্তরের আর্তিকে হৃদয়ঙ্গম করে, সামাজিক বিঘ্ন -বিপদকে উপেক্ষা করে তাঁর কন্যাসমা রানীকে সৎপাত্রে সম্প্রদান করেন। অপর প্রান্তে রানী তাঁর প্রথাগত শিক্ষা ব্যতিরেকে আপন নিষ্ঠায় গুরুদেবকে জীবনের ধ্রুবতারা রূপে শ্রদ্ধার আসনে উপস্থাপিত করে তাঁর প্রদর্শিত পথে নিজেকে উত্তরণ করেছেন জীবনভর।

*******

** রচনাসূত্র: গুরুদেব — রানী চন্দ

Sahityika Admin

2 comments

  • স্বীকার করি, রাণী চন্দর নাম আমি শুনেছি কিনা মনে করতে পারছি না। সাহিত্যিকার দৌলতে প্রতি সংখ্যাতেই অনেক অজানা কিছু জানতে পারি।
    ধন্যবাদ সাহিত্যি

  • মন দিয়ে পড়লাম।
    অনেক অচেনাদের চিনিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।