ভুল ঠিকানা
@ স্বপ্না দাশগুপ্ত (চন্দন দাশগুপ্তের স্ত্রী), ১৯৬৯
আজকাল প্রায়ই বার্ধক্য আসে আমার দুয়ারে,
কড়া নাড়ে, হাঁক দেয়,
যেন বলে ‘”অবনী বাড়ী আছ?”‘
আমি সাড়া দিই না, চুপটি করে আড়াল হয়ে থাকি|
ভাব তো একবার বার্ধক্যের আমাকে প্রয়োজন!
আমি তো হতবাক, দিশাহীন|
আমি তো আজও সকালে উঠে
রোদ্দুরকে ‘সোনা ‘ বলে আদর করি,
আমি তো আজও ভোরের জবার ঠোঁট
অঙ্গুলিস্পর্শে স্বর্গ সুখ লাভ করি,
চেয়ে থাকি বিমুগ্ধ বিস্ময়ে,
ভাবি, রাত তাকে এত সুন্দর করে সাজালো!
আমি তো আজও রিক্সায় সওয়ার হয়ে
হাওয়ায় চুল উড়িয়ে বহু দূর দূর যেতে ভালবাসি,
আমি তো সাইকেল নিয়ে দস্যিপনা করা কিশোরকে
পাঠিয়ে দিই আমার অনেক অনেক আদর,
আমি তো এখনো পিঁপড়ের সারির পিছন পিছন
পাঠিয়ে দিই আমার মনকে,
সে গিয়ে দেখে আসে তাদের ভরা সংসার|
চড়ুই পাখির ঝগড়া আজও আমার মন কাড়ে,
কাজ ফেলে হাজির হই সালিশি করতে|
পুকুরের জলে, ঠিক দুক্কুরবেলা, ভেসে যায় নিঃসঙ্গ পাতা
আমি মনকে পাঠাই তাকে সঙ্গ দিতে —
তবে কেন?
তবে কেন বার্ধক্য আসে আমার খোঁজ নিতে?
ওর আমাকে কি দরকার?
কেউ বার্ধক্যকে একটু বলে দাও – এটা ভুল ঠিকানা, রং নাম্বার ||
Add comment