সাহিত্যিকা

দুটি ছড়া – কী কান্ড, তৈলঙ্গস্বামী উবাচ

দুটি ছড়া – কী কান্ড, তৈলঙ্গস্বামী উবাচ
@সোহম দাশগুপ্ত, ১৯৭৭ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং

কী কান্ড!
শুন্‌ছ দাদা, নয়ডাতে এক রদ্দি বুড়ো থাকে,
রোজ সকালে মাথায় নাকি সর্ষেবাটা মাখে!
সেই ঝাঁঝে তার মগজখানা কিলবিলিয়ে ওঠে,
“সব ঝুটা হ্যায়”, চেল্লায় সে সবার ওপর চ’টে।
বাড়লে বেলা চোলাই টানে ইঁটের পাঁজায় বসে,
জমলে নেশা সারাদিনের ছকখানা নেয় কষে।
কোন শালাকে টাইট দেবে, কোনো শালাকে ঢিলে,
পেলান ছ’কে চড়ে বসে আশশ্যাওড়ার ডালে!
দূরবীণেতে চক্ষু রেখে, অঙ্গ মুড়ে কাঁথায়,
খুঁজে বেড়ায় জ্ঞানের কাঁঠাল ভাঙবে সে কার মাথায়?
পাড়ার লোকেও মাড়ায়না আর শেওড়াগাছের ধার,
দূরের থেকেই বলে- “দাদু, খুরে নমস্কার।“
বাক্যবানে বাঘ মারে আর কামান দিয়ে মাছি,
কোদাল দিয়ে বগল কামায় পড়লে অম্বুবাচী!
রাত্রি হলেই দাদু নাকি টেনশনেতে মরে,
এমন দামী মগজখানা কেউ যদি দেয় ঝেড়ে!
শোয় নাকি তাই মুণ্ডটাকে সিন্দুকেতে রেখে?
চলনা দাদা, নয়ডা গিয়ে নিজেই আসি দেখে।

-সোহম
এপ্রিল, ২০২৫

*******

তৈলঙ্গস্বামী উবাচ
হ্যাঁরে প্যালা, যাস কোথা এই সাত সকালে?
দু’দন্ড যা না বসে পাই তোকে নাগালে।
বাড়িতে বন্দী হয়ে প্রাণটা যে হাঁসফাঁস,
একটু সঙ্গ দে’না, চেটে করি উল্লাস।
যেমনি খিদে পায়, ঝগড়াও পায় রোজ,
কার পায়ে পা দেবো, সারাদিন করি খোঁজ।
তাই বলি, প্যালাভাই, বোস না দু’দন্ড,
দু’মিনিটে সেরে নিই লঙ্কাকান্ড।
কি বললি, তাড়া আছে, যাচ্ছিস মগরা?
যাবি’খন, তার আগে করে যা না ঝগড়া।
সময় নেবোনা মোটে তোকে আমি চটাতে,
মুহুর্তে টের পাবি কি না পারি ঘটাতে!
কি বললি, রাগবিনা? তোর মাথা ঠান্ডা?
অসীম ধৈর্য তোর? অশ্বের আন্ডা!
আসলেতো রাম ভীতু, মেনিমুখো মার্জার,
সারাদিন মুখ বুঁজে গালি খাস ভার্যার।
শিড়দাঁড়া বলে আর কিছু নেই অঙ্গে?
তাইতো এমন হাল আজ এই বঙ্গের।
শুনিসনি শিকাগোতে স্বামীজীর বার্তা,
“ভীতু লোগ লাইফ মে রোজ রোজ মরতা।”
সত্যিই তোকে দেখে লাগে বড় দুঃখু,
এতোগুলো পাশ দিয়ে রয়ে গেলি মুখ্যু!
তাই বলি, দু’মিনিট চুপচাপ বসে শোন,
স্বরচিত স্বামীজীর গোটাকয় কোটেশন।
প্রতিরাতে শুতে যাই নাকে দিয়ে তৈল,
রোজ শুনি স্বপ্নেতে কে যেন কি ক’ইল!
গতকাল আচমকা চোখ মেলে আঁধারে,
দেখলাম, বসেছেন শিয়রেই, বাঁ ধারে।
ভরা টাকে বিলি কেটে বললেন বিলে,
“জাগিবেনা এ বাঙালী, তুমি না জাগিলে।”
বিশ্বাস হছেনা? ভাবছিস সবই গুল?
এই দেখ খাড়া হয়ে গেছে টাকে যত চুল!
বিড়বিড় করিসনে, যা বলার খুলে বল,
দু’মিনিটে হয়ে যাক চুলোচুলি, কোন্দল।

তাও তুই বসবিনে, করবিনে ঝগড়া,
যা তবে রসাতলে, আজীবন রগড়া!

– সোহম
এপ্রিল, ২০২৫

Sahityika Admin

Add comment