সাহিত্যিকা

ডক্টর অসীমা চ্যাটার্জীকে যেভাবে পেয়েছি, যেভাবে দেখেছি

ডক্টর অসীমা চ্যাটার্জীকে যেভাবে পেয়েছি, যেভাবে দেখেছি
@রমা সিনহা, ১৯৭৬ স্থাপত্য বিভাগ

বিশিষ্ট বাঙালি মহিলা বৈজ্ঞানিক ডক্টর অসীমা চ্যাটার্জীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই আমার এই লেখা। বি ই কলেজের ক্যাম্পাসে থাকার সুবাদে তিনি ছিলেন আমাদের প্রতিবেশী, এবং উনাকে খুবই কাছে থেকে দেখার, জানার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমাদের স্টাফেদের A টাইপ কোয়ার্টারে, প্রিন্সিপালের কোয়ার্টারের (এখন বিই কলেজের White House বলে) একতলায় ওনারা থাকতেন।

ওদের বাড়িতে আমাদের জন্য ছিল অবারিত দ্বার। আর প্রতিবেশী হবার সুবাদে আমি ও আমার মত ক্যাম্পাসের কচিকাঁচা অনেকেই ওনাকে জেঠিমা বলতাম। তখন বি ই কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আর কেমেষ্ট্রি, জিওলজির হেড অফ দ্যা ডিপার্টমেন্ট, প্রফেসর ডঃ বরদানন্দ চ্যাটার্জী, D.Sc. F.N.A ছিলেন আমাদের সকলের জেঠু, এবং ডক্টর অসীমা চ্যাটার্জী ছিলেন ওনার স্ত্রী। যদিও ছোটবেলায়, রাশভারী, কর্মব্যাস্ত জেঠিমার চেয়ে গল্প বলা জেঠুর সাথেই আমাদের ভাব ছিল বেশি, কিন্তু একথাও বলবো যে জেঠিমার জন্যই আমরা বাংলা গল্পের বই পড়তে শিখেছিলাম। ওনার একটা বিরাট পড়ার টেবিল ছিল। বেশিরভাগ সময়ে ওখানে বসেই কাজ করতেন। আর ওনাদের শোবার ঘরে দেওয়াল জোড়া ক্যাবিনেটে নানা রকমের বাংলা বই রাখা থাকতো। আমরা, মানে কচিকাঁচারা যখন যেতাম, আর ওনারা তখন যদি নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকতেন তাহলে আমাদেরকে সোজা ঐ গল্পের বই এর ঘরে পাঠিয়ে দিতেন। কোনদিন উনি একা বসে কাজ করলে সোজা ওনাদের শোবার ঘরে পাঠিয়ে দিতেন। ক্যাবিনেটে ছোটদের অজস্র গল্পের বই – সন্দেশ, আনন্দমেলা, শুকতারা, নানান রকমের বই রাখা আছে, আর আমরা তাই নিয়েই পড়তাম। এই বাড়িতে ছিল আমাদের অবাধ স্বাধীনতা। যেমন খুশী গল্পের বই নিয়ে আমরা পড়তাম। একদিকে যেমন বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, সারদা মা ও মিশনের মহারাজদের লেখা আধ্যাত্মিক বিষয়ের বই ছিল, অন্যদিকে তেমন আমাদের ছোটদের জন্য নানা রূপকথা, কল্পবিজ্ঞান, জ্ঞান ও বিজ্ঞানের বইও থাকতো। এসব বই এর পাঠক পাঠিকা ছিল আমার ভাইবোনেরা (আমি, দীপু, জোনাকি) ও হেলেন (প্রফেসর পি এন চ্যটার্জির মেয়ে)। দিদি, বেবিদি ছিল জুলিদির বন্ধু। আমরা ছোট বলে আমাদের বেশি পাত্তা দিতো না।

ওনাদের মেয়ে জুলি’দির সাথেও আমাদের ভাব ছিল। জেঠিমা, জেঠু হয়তো বাড়ি নেই। জুলিদি একা নিজের ঘরে বসে পড়াশোনা করছে। আমাদের দরজা দিয়ে উকি মারা ছোট ছোট মুন্ডুগুলো দেখে হেসে বলতো “আয় ভিতরে আয়”। আমরা বলতাম “তুমি তো পড়ছো! বলতো কিছু হবেনা, তোদের খেলা, বই পড়া যা খুশী কর। তবে বইগুলো পড়া হয়ে গেলে তাকে তুলে রাখবি”। আমাদের একটা মজার খেলা ছিল জুলিদির টিচার হিসেবে ওর সেমিনার শোনা। একটা ব্ল্যাকবোর্ডে জুলিদি কেমেস্ট্রির শক্ত শক্ত ফর্মূলা নিয়ে কিছু লিখতো ও বলতো। আমরা চেয়ার টেনে এনে বসে বসে শুনতাম, আর কিছু না বুঝেই প্রশ্ন করতাম। এটা একটা মজার খেলা ছিল। আমার দিদি, আর বেবিদি (প্রফেসর পি এন চ্যাটার্জীর বড়ো মেয়ে) জুলিদিকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রেসিডেন্সী কলেজে কেমেস্ট্রী অনার্স নিয়ে পড়ে। জেঠিমা সায়েন্স কলেজ যাবার সময় রোজ ওনার গাড়ীতে দিদিদের নিয়ে যেতেন, আর প্রেসিডেন্সীতে নামিয়ে দিতেন। বাবা, জেঠিমা, জ্যেঠু সকলে একসাথে সায়েন্স কলেজে অনেকদিন কাজ করেছেন। তাই আমাদের ও হেলেনদের বাড়ির সঙ্গে ওনাদের বিশেষ হৃদ্যতা ছিল, অন্যদের সাথে অতোটা নয়। ব্যক্তিগতভাবে নিজের ছাত্রছাত্রীদের ও নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন, তাই কারোর বাড়ি খুব বেশি যাওয়ার সময় পেতেন না। তবে দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন একমাত্র আমার মায়ের সাথেই পূজা মন্ডপে অঞ্জলি দিতে যেতেন। আর দুর্গাপূজার অষ্টমীর জুলিদিও আমার মায়ের সাথে ঠাকুর দেখতে যেতো।

Photo: Prof. Asima Chatterjee at Zurich University, 1949.
From the collection of Indian Academy of Science.

নিজের পড়াশোনা আর গবেষণার কাজে জেঠিমা অত্যন্ত ব্যস্ত থাকলেও বাড়ির প্রতি সমান খেয়াল রেখেছিলেন। এই প্রসঙ্গে একটা ঘটনা বলি, ১৯৪৭ সালে জেঠিমা উচ্চশিক্ষার্থে University of Wisconsin যাওয়ার সময় মাত্র ১১ মাসের শিশুকন্যা জুলিকে সঙ্গে নিয়ে লম্বা জাহাজ সফর করে পৌঁছেছিলেন। দেখাশোনা করার জন্য একজন আয়া অবশ্য ছিল। জ্যাঠামশাই যখন বি ই কলেজে জয়েন করেন, জুলিদি তখন তিন বছরের। এরপর গবেষণার কাজে আরও একবার জেঠিমাকে জুরিখ যেতে হয়। আর উনি শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়েই সেখানে যান। এত ব্যাস্ততার মাঝেও গবেষণার কাজ ও ছোট একটি মেয়ের দেখাশোনা করা একসঙ্গেই করেছেন। ওনাদের একমাত্র সন্তান জুলিদিকে খুবই যত্ন সহকারে প্রতিপালন করেছেন। নম্র, শান্ত ও মেধাবী জুলিদি তাই এখনও আমাদের সবার খুবই প্রিয়। এতো গুণী ও বিখ্যাত পিতামাতার সন্তান হয়েও তার কোন অহঙ্কার ছিল না। সবাইকে সমানভাবে ভালবাসতো। এখনও আমাদের নিজেরই ছোট ভাইবোনদের মতো দেখে।

জেঠিমা রাশভারী মানুষ হলেও মনেপ্রাণে আমাদের খুব ভালোবাসতেন। আমরা সবাই তখন খুব রোগা ছিলাম, তাই জেঠিমা প্রায়ই পায়েস বানিয়ে আমাদের খাওয়াতেন। সেটা সত্যিই অত্যন্ত ভালো হতো। ওনার হাতের রান্না ছিল খুব ভালো। বাবা বলতেন, যারা কেমেষ্ট্রিতে ভালো হয় তাদের রান্নাও খুব ভালো হয়। কারণ তারা রান্নার মশলাপাতির অনুপাত সঠিকভাবে করেন, যেমন রসায়নাগারে পরীক্ষা করতে গেলে সবকিছু সঠিক অনুপাতে নিতে হয়। তাহলেই সঠিক পরীক্ষা করা যায়। এই সূত্র আমাদের এই জেঠিমার ক্ষেত্রে সঠিকভাবেই প্রয়োগ করা যায়।

জেঠিমার বাড়ি ছিল বর্ধমান জেলার গুশকরা গ্রামে। জন্ম ১৯১৭ সালে ২৩শে সেপ্টেম্বর, ও মৃত্যু ২২ শে নভেম্বর ২০০৬ সালে। উনার মা কমলাদেবী। ওনার বাবা  ইন্দ্রনারায়ন মুখার্জী Calcutta Medical College থেকে MB করে traditional medicine এ প্র্যাক্টিস করতেন। ভাই বিশিষ্ট অর্থোপেডিক চিকিৎসক ডক্টর সরসী মুখার্জী Calcutta Medical College থেকে MBBS আর MS করেছিলেন। তিনি Department of Nuclear Medicine, PGIMER, SSKM স্থাপন করেছিলেন। মা কমলাদেবী ছিলেন অত্যন্ত উদারমনা। মেয়েকে বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়তে কোনোদিন আপত্তি করেননি। সেই পর্দানসীন যুগে, স্কটিশ চার্চ কলেজে একা একজন মহিলা ছেলেদের সাথে ক্লাস করতেন, এবং ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলেন। এরপর ১৯৪৪ সালে উনি ভারতবর্ষের প্রথম মহিলা D.Sc. (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়)। এবং কিছুদিন পরে FASc, FNA, খয়রা রসায়নের অধ্যাপক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭৫ সালে পদ্মভূষণ ছাড়াও তিনি সন্মানিত হয়েছেন অসংখ্য সর্বভারতীয় পুরস্কারে, যেমন শান্তিস্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার, UGC সিভি রমন পুরস্কার, PC Ray পুরস্কার। আর আছে শিশির কুমার মিত্র লেকচারশিপ এবং ডক্টর জিপি চ্যাটার্জি লেকচারশিপ। প্রসঙ্গত জানাই, দুই ভাইবোনই শান্তিস্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার পেয়েছিলেন, জেঠিমা পেয়েছিলেন    Chemical Sciences এ, আর ভাই Medicine এ।
এক নজরে, জেঠিমা ভারতীয় জৈব রসায়নবিদ ও উদ্ভিদ রসায়নবিদ ছিলেন। তাঁর আগ্রহের ক্ষেত্র ছিল ঔষধি রসায়নের বিশেষ উল্লেখ সহ প্রাকৃতিক পণ্য। সাদা নয়নতারা ফুলের নির্যাস থেকে মৃগী রোগের ওষুধ ও ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার করেন, ক্যান্সার বিষয়েও কাজ করেন।

এখানে আরও একটা কথা উল্লেখ করি যে, উনি কেমেষ্ট্রি নিয়ে পড়াশোনা আর গবেষণা করলেও খুব ভালো সংস্কৃত জানতেন।

এক নজরে কিছু বলতে হলে:
** কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি প্রাপক
** ১৯৬০ সালে Indian National Science Academy র ফেলো
** ১৯৬১ সালে শান্তিস্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার, প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি এই সন্মান অর্জন করেছিলেন।
** ১৯৬২ – ১৯৮২ সময়কালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের খয়রা রসায়নের অধ্যাপক
** ১৯৭৫ সালে ভারত সরকারের পদ্মভূষণ সন্মান, ও Indian Science Congress Association এর প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট
** ১৯৮২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাজ্যসভার সদস্যাপদে মনোনয়ন করেন। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত উনি রাজ্যসভার সদস্যা ছিলেন।
** ১৯৮৯ সালে স্যার আশুতোষ মুখার্জি স্বর্ণপদক
** ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, জন্মশতবার্ষিকীর দিনে গুগল তাদের Google Doodle নির্মান করে।

প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী জেঠিমাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা ও সন্মান করতেন। একবার ওনাদের বাড়ি গিয়ে দেখি শ্রীমতি গান্ধী নিজে ফোন করে দেশের বিজ্ঞান বিষয়ক দপ্তরের জন্য পরামর্শ চাইছেন। প্রফেসর সত্যেন্দ্রনাথ বসুও ওনাকে খুব স্নেহ করতেন, ছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের অন্যতম প্রিয় ছাত্রী। মাঝেমধ্যে ওনাদের বাড়ি এলে, বাবাও দেখা করতে যেতেন। আজ সেসব কথা মনে পড়লে নিজেদের খুবই ভাগ্যবান মনে হয়।

ছাত্র ছাত্রীদের কাছে তিনি ছিলেন ‘মাস্টার’। সবাই তাঁকে ঐ নামেই সম্বোধন করতো। আজ দেশ বিদেশের নানা জায়গায় তাঁর কৃতি ছাত্রছাত্রীরা ছড়িয়ে আছেন ও সুনামের সাথে কাজ করছেন। জেঠিমা মানতেন যে শিক্ষা মানুষকে পরিনত হতে সাহায্য করে। তাই অনেক দুস্থ ছেলেমেয়েদের বই পত্র ও লেখাপড়ার খরচ দিয়ে তাদের মানুষ হতে সাহায্য করেছেন।

২০০৬ সালে আমি ও আমার ছোট বোন জোনাকি ছেলেমেয়েদের নিয়ে ওনাদের মানিকতলার বাড়িতে দেখা করতে যাই। উনি তখন অসুস্থ, শয্যাশায়ী। ওনার মাথার দিকে একটা ব্লাক বোর্ডে সাদা চকে পরমহংসদেব, সারদা মা ও বিবেকানন্দের ছবি আকা। তার নিচে উনি যেসব ওষুধ খান তার নাম ও রাসায়নিক ফর্মুলা লিখে রেখেছেন। সেই অবস্থায় কোন ওষুধ কি কাজ করে সেটা আমাদের বুঝিয়ে বললেন।

নব্বই বছর বয়সেও মা সরস্বতীর বরপুত্রী নিরলস পড়াশোনা করে গেছেন। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের স্নেহধন্যা এই কন্যাকে আমার প্রণাম জানাই।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
** প্রবন্ধ: অসীমা চ্যাটার্জি (এসসি প্রকাশী)
** উইকিপিডিয়া

*******

সম্পাদকীয় সংযোজন:

When Dr. Asima Chatterjee was growing up in Calcutta in the 1920s and 1930s, it was almost unheard of for a woman to study chemistry.
Dr. Chatterjee’s groundbreaking contributions to medicine were recognized by universities all over the world.
A firm believer in collaboration and teaching, Dr. Chatterjee also founded and led the department of chemistry at Lady Brabourne College. She started a research institute and mentored many of India’s rising chemistry scholars.

Source: https://doodles.google/doodle/asima-chatterjees-100th-birthday/

She published around 400 papers in national and international journals and more than a score of review articles. On the request of the late Professor Satyendra Nath Bose, FRS, she wrote Sarai Madhyamic Rasayan, a book in Bengali on chemistry for secondary school students, published by Bangiya Bigyan Parishad, an Institute for the Popularisation of Science founded by SN Bose himself. She had edited and rewritten Bharater Bonousadhai (originally compiled by late Dr. KP Biswas), a treatise in Bengali on Indian Medicinal Plants. As an author/principal-editor she compiled The Treatise on Indian Medicinal Plants published earlier by the Publication and Information Directorate, CSIR, then by the National Institute of Science Communication, CSIR and now by the National Institute of Communication and Information Resources, CSIR.

In 1947 she left for the U.S.A. on study leave, and worked with Professor L. M. Parks, University of Wisconsin, on Naturally Occurring Glycosides, & Professor L. Zechmeister, California Institute of Technology, Pasadena, on Carotenoids and Provitamin A during 1948-49 (in recognition of this work she was awarded the Watumull fellowship) and with Professor P. Karrer, N. L., University of Zürich during 1949-50 on Biologically Active Indole Alkaloids, which became her life long interest. After her return to India in 1950, her works on Rauwolfia species made her close association with Professor Salimuzzaman Siddiqui, FRS, former Director of Husein Ebrahim Jamal Post Graduate Institute of Chemistry, University of Karachi, Pakistan.

Dr. SC Prakashi, one of her PhD students, recalls: “Being one of her early Ph.D. students I have closely witnessed her initial struggles to establish herself. During those hard days, she received encouragement from Profs. Satyen Bose, Meghnath Saha, S. K. Mitra, B. C. Guha and Sir J. C. Ghosh and other Vice-Chancellors of Calcutta University. Her husband, Professor Baradananda Chatterjee, a renowned Physical Chemist himself and the Vice-Principal of the then Bengal Engineering College (now a Deemed University), Sibpur, Howrah, solidly stood by her.”

Prof. Chatterjee’s life had a unique example of harmony and commitment between professional and home-life. She had always been a devoted wife, mother, daughter, elder sister, mother-in-law and grandmother. She would rise up early in the morning and would complete all household chores, including cooking, before she left for the University. On returning, late in the evening, she would again return to housework.

Source: https://artsandculture.google.com/story/qgWhCdKgS8UJIw
https://shesightmag.com/asima-chatterjee-one-of-indias-first-woman-doctorates-of-science/#google_vignette

******

Sahityika Admin

Add comment