সাহিত্যিকা

প্ৰিয় মা,

প্ৰিয় মা,
অঙ্কিতা মজুমদার, ২০০৯ ইলেকট্রনিকস ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং

তোমার কথা বলতে গেলে হুড়মুড় করে সমস্ত কিছু চোখের উপর এসে পড়ে
গলার কাছে কী একটা আটকে থাকে।
আর বলা হয় না।
মানুষ বুঝে ফেলবে আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে।
আমি ঝাপসা চোখ নিয়ে কারো দিকে তাকাতে চাইনা।
বড্ড শীত পড়েছে।
সেই যে তুমি একটা গাবদা জ্যাকেট পরতে শীত পড়লেই
কী যেন বলতে,
হ্যামিল্টন সাহেবের কোট।
এই শীতে বাবা তোমার হাতে বোনা সোয়েটার পরার কিছুদিন পর খেয়াল করল গলার কাছটা খুলে আসছে।
বেচারা যত্ন করে তুলে রেখেছে।
যাতে একেবারে না ছিঁড়ে যায়।
তোমার হাতের জিনিস!
আমি তো আর খুলে আসা উল বুনে দিতে জানিনা।
দেখ সুযোগ ছিল, শিখলাম না।
আসলে বুনে দেওয়ার কাজ তো তোমার।
সেদিন আলমারিতে তোমার বোনা জ্যাকেটটা দেখলাম।
আনতে গিয়েও আনলাম না।
বেশি পরলে খারাপ হয়ে যায় যদি।
তুলে রাখি।
যেন তোমার বোনা সোয়েটার আগলে রাখলেই তোমায় আগলে রাখা যাবে।
আমার প্রথম সরস্বতী পুজোর শাড়িটা মনে আছে?
তুমি কিনে এনেছিলে, ঘিয়ে গরদ লাল পাড়, জমিনে ছোট ছোট বরফি।
একদম অন্যরকম।
ক্লাস নাইনে কজন নতুন শাড়ি পরে বলত সরস্বতী পুজোয়!
তারপর সরস্বতী পুজো মানেই নতুন শাড়ি।
একটা কালো জামদানি এনেছিলে একবার।
জমিনে নানা রঙের কাজ করা।
সাথে রঙ মেলানো গয়না।
সেই শাড়িটা বহুদিন দেখিনা!
কাউকে দিয়ে দিয়েছ নিশ্চই।
আর কয়দিন পর আরেকটা সরস্বতী পুজো এসে যাবে।
এখন তো অনেক বড় হয়ে গেছি তাই আর বেড়ানোও নেই,
বন্ধুরাও।
বড় হতে হতে ছাদে মাথা ঠেকে যাচ্ছে।
ছুটি পাচ্ছিনা।
ঘর আগলাই,
কাজকম্ম, জীবন
থমকে দাঁড়ালেই তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করে।
ইচ্ছা করে তোমার পুরোনো শাড়িতে নাক ডুবিয়ে বসে থাকি।
একটা জীবন কেটে যাক ঝড়ের মত।

২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

কৃতজ্ঞতা স্বীকার – ইন্টারনেট, চিত্রদুটির জন্য

 

 

Sahityika Admin

1 comment

  • সূচিপত্র সাহিত্যিকা ৩৫তম সংখ্যা (মে ২০২৪) – সাহিত্যিকা says:

    […] সেন, ২০০৯ আর্কিটেকচার ও প্ল্যানিং প্ৰিয় মা, অঙ্কিতা মজুমদার, ২০০৯ ইলেকট্রনিকস ও […]