সাহিত্যিকা

ধর্ম

ধর্ম
প্রবীর কুমার সেনগুপ্ত, ১৯৬৯ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং

ধর্ম তোমার মর্ম বোঝার মোদের তো নাই সাধ্য,
ইচ্ছা থাকুক – নাই বা থাকুক, মানতে মোরা বাধ্য।
ধর্ম যুদ্ধে হারছে বুদ্ধ – জিতছে দূর্যোধন,
হিংসা, হত্যা, রক্ত – এ সব মানতে চায় না মন।
নির্দয়া সেই দয়া নদী – ডুবলো লক্ষ লোক,
রক্তস্নাত চণ্ডাশোকে জাগলো ধর্মাশোক।
নানান ধর্ম মিলিত হয়েছে জেরুজালেমের তীর্থে
যুদ্ধ হয়েছে মানুষে মানুষে মৌলবাদের স্বার্থে।

ক্রুশ বিদ্ধ যীশুর হাতের ক্রস হাতে নিয়ে যুদ্ধ।
চেঙ্গিস খান অনেক পেয়েছি, পাইনি আরেক বুদ্ধ।
ক্রস হাতে নিয়ে বিশাল বাহিনী ক্রুসেড যুদ্ধে লিপ্ত,
ধর্মের নামে জিহাদ করিতে হত্যা লীলায় ক্ষিপ্ত।
ধর্মের ক্রোধে ধ্বংস হয়েছে বামিয়ান আফগানে –
কতো না রক্তে সুধিবে এ ঋণ বিধাতাই শুধু জানে।
কুরুক্ষেত্র, কারবালা আর প্যালেস্টাইনের প্রান্তে
অক্ষৌহিনির মৃত্যু মিছিলে পারি নাই রেশ টানতে।
ধর্মে ধর্মে লড়াই বেধেছে প্রাচীণ এবং নব্যে,
নগর ভেসেছে রক্ত নদীতে – লেখা ইতিহাস কাব্যে।
শহর নগর ধ্বংস হয়েছে, রক্তে গিয়াছে ভাসি,
ধর্ম রক্ষী মৌলবাদীরা হেসেছে অট্ট হাসি।
হিটলার আজও এক নম্বরে ইহুদি নিধন যজ্ঞে
আত্ম হত্যায় নিথর শরীর জমা পরে আছে মর্গে।

ধর্ম তোমার ইচ্ছেটা কী – রক্ষা কিংবা ধ্বংস,
তোমায় রক্ষা করার নামে কত যে নির্বংশ।
জেরুজালেম বা মক্কা-মদিনা ধর্ম পিঠস্থান,
কত শত শত মানুষের সেথা চলিয়া গিয়াছে প্রাণ।
ধর্মের নামে শতাব্দী পার, বয়েছে রক্ত গঙ্গা,
অধর্মী আর বিধর্মীদের পাই নাই কোন সংজ্ঞা।
কবির স্বপ্নে – একটি বৃন্তে হিন্দু মুসলমান,
বাস্তবে কত গৃহহীন হলো, কত না গিয়েছে প্রাণ।
দেশ ভাগ হলো, গ্রাম ভাগ হলো, ভাগ হলো কত ঘর,
হানাহানি আর কাটাকাটি হলো, ভাই হয়ে গেল পর।

সকল নদীই এগিয়ে চলেছে সমুদ্দুরের পানে,
সেথায় রয়েছে অন্তিম সুখ – সকল নদীই জানে।
সকল ধর্ম তোমায় পুজিছে পরমেশ্বর জ্ঞানে,
মৌল বাদীরা নিজের স্বার্থে বিভেদ, বিরোধ আনে।

ধর্ম তোমার কর্মটা কী যুদ্ধ কিংবা শান্তি
নানান গুরুর নানান মতে মোদের মনে ভ্রান্তি।
সবাই বলে – আমিই শ্রেষ্ঠ, আমিই কেবল সৎ
কয়জনা আর বলতে পারে – সকল মতেই পথ।
কল্পতরুর আশীর্বাদে – চেতনা আজ হোক,
হিংসা ভূলে আবার আসুক শান্ত মর্তলোক।।

২৮/১২/২০২৩

Sahityika Admin

1 comment

  • সূচীপত্র মার্চ এপ্রিল ২০২৪ (সাহিত্যিকা ৩৩ সংখ্যা) – সাহিত্যিকা says:

    […] ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ধর্ম প্রবীর কুমার সেনগুপ্ত, ১৯৬৯ […]