তিনটি কবিতা
রামু দত্ত, ১৯৭৯ ইলেকট্রনিকস ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং
‘অপেক্ষা
‘অপেক্ষা’ – কতো দুখের জানো ?
রোজের মতো আজও করবে দেরি
ঘড়ির কাঁটায় চলে নাতো জীবন
কেউ ধীরে, দ্রুত চলে না বাস গাড়ি।
আজ দিনের ওপর ‘ভালবাসা’ ছাপ
ভালবাসতে একটা দিন লাগে যেন?
আরো কাছাকাছি আসার আইনি পাশ
নিঝুম জায়গা? পাবে কোথাও কোনো!
নীল জলেতে পা ডুবিয়ে বসো
আকাশ আজ বড্ডো ঘন নীল
সাথী কোথায় গেলো কে বা জানে
বুঝি আমার মতো শ্রান্ত শঙ্খচিল।
বাবা কি আজ পথের মাঝে গাছ?
মা কাঁদছে ‘সব্বোনাশ’ হবে বলে
এত দেরি? না হয়নি কোনোদিনও
আরো থাকি ‘অপেক্ষা’ নিয়ে কোলে।
*******
আবার এসেছি ফিরে —
আবার এসেছি ফিরে —
আম্রমুকুলদল উড়াইছে ধ্বজা তার।
মৃদুমন্দ বাতাসে দেয় পুরে
উদাসী কোকিলের মিঠে স্বর
রাঙাবো দিগন্তে, জ্বালাবো রক্ত আগুন
শিমুল পলাশ মহুয়ার বনে।
বয়ে আসে ভোরের দখিনা বাতাস
নবপত্রিকায় লাগে দোল
আবার সেজে ওঠে বিষণ্ণ শাখা
হাসুক নামগোত্রহীন আগাছার ঝোপ।
এবার দাও বিদায় শীতেরে —
শুকনো পাতার সাথে সে ঝরে যাক
চলে যাক কালের অতল গহ্বরে।
*******
কাল এসেছিলো ওরা সবাই —
কাল এসেছিলো ওরা সবাই —
ভরেছিলো শহরের প্রান্তে থাকা
এক টুকরো এ মাঠ – এ উদ্যান।
সবার বয়স হঠাৎই গেলো থমকে দাঁড়িয়ে
কারো বা হাঁটতে শুরু করে পিছন পানে।
একদল একেবারে ফিরে গেছে ছেলেবেলায়
চিত্রগুপ্ত কলম দিয়ে টাক চুলকায়
৪৫ বছরের হিসেবে গরমিল।
সবার জীবন থেকে উধাও শীত
উতাল হলো বসন্ত, শুধু বসন্ত কেন
অঝোর ধারে নামে হাসির বরষা
বেহিসেবি কথা শুনে, গাছের পাতা
খসে পড়তে যায় ভুলে।
এক খ্যাপা বৈজ্ঞানিক
বয়স কমানোর ওষুধ আবিষ্কার করে ফেলে
লেকের পাশে দৌড়াতে দৌড়াতে চীৎকার — ইউরেকা ইউরেকা।
ফিরে গেছে সবাই
হয়তো স্মৃতিতে তুলে রেখেছে
খুশি ভরা একটি দিন আর এ উদ্যান।
স্মৃতির কোঠায় সাজানো আছে সে মুখগুলো
যারা কোনোদিন আসবে না এ হুল্লোড়ে।
Add comment