যাগযজ্ঞ – দ্বিতীয় পর্ব
দীপক চক্রবর্তী, ১৯৭৬ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
(যাগযজ্ঞ প্রথম পর্ব আমাদের সাহিত্যিকা’র দ্বাদশ সংখ্যা ফেব্রুয়ারী, ২০২২ এ প্রকাশিত হয়েছিলো। পাঠকদের অনুরোধে দ্বিতীয় পর্ব এইবারে প্রকাশিত হ’লো। প্রথম পর্বের প্রকাশিত গল্পের সারাংশ পাঠকদের সুবিধার জন্য দেওয়া হলো –
বহু প্রাচীন এক যজ্ঞ। এই অঞ্চলের জমিদারমশাই যাঁর উৎসাহে এই যজ্ঞানুষ্ঠান শুরু হয়েছিল, তিনি নিজের উৎসাহে নিজেই চলে আসতেন উদ্বোধনের জন্য। এখন তিনি নেই, যজ্ঞের উদ্বোধন তাই এখন সমস্যা। যজ্ঞ সমিতি’র সম্পাদক মশাই স্থানীয় রাম মন্দির এবং সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষদের যৎকিঞ্চিৎ ভেট দিয়ে উদ্বোধনের জন্য রাজি করিয়েছেন। বর্তমানকালে আর সময়মতন উদ্বোধন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই নির্দিষ্ট শুভক্ষণে সম্পাদক মশাইয়ের অনুমতি নিয়ে যজ্ঞ শুরু করে দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
রাম মন্দির এবং সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষদের আসতে দেখে সম্পাদকমশাই তাঁদের অভ্যার্থনা করার জন্য মণ্ডপের প্রধান দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। মূল মণ্ডপে উঠবার জন্য রামমন্দিরের অধ্যক্ষ পা তোলার সাথেসাথেই প্রধান পুরোহিত ঘন্টা বাজিয়ে মন্ত্রোচ্চারণ শুরু করলেন। ঘন্টাধ্বনি শোনামাত্র উপস্থিত ভক্তদলের সমবেত হুলুধ্বনির ঝড়ে সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষ প্রচণ্ড ঘাবড়িয়ে গিয়ে রামমন্দিরের অধ্যক্ষকে পিছন থেকে জাপটিয়ে ধরলেন। টাল সামলাতে না পেরে রামমন্দিরের অধ্যক্ষ সম্পাদক মশাইয়ের পাঞ্জাবী’র আস্তিন ধরে টান দিলেন আর সম্পাদক মশাই টাল সামলাতে না পেরে অধ্যক্ষ মশাইয়ের বুকের ওপরে গিয়ে পড়লেন। ফলস্বরূপ মণ্ডপের প্রধান দরজার সামনে তিনজনেই জড়াজড়ি করে গড়াগড়ি দিতে লাগলেন।)
কালবৈশাখীর ঝড়ে যেমন বড় বড় গাছ ধরাশায়ী হয়, তেমনই সমবেত ভক্তকূলের মুখনিঃসৃত হুলুঝড়ে যজ্ঞমণ্ডপে তিনজন বিশিষ্ট গুরুজন ভুপতিত হওয়ায়, ভক্তবৃন্দের ধারণা হ’ল যে তাঁরা উচ্চমার্গের দিকে ধাবিত হয়ে সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত করছেন। তাই তাঁদের আরও কিছুটা রাস্তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভক্তবৃন্দ আরও উজ্জীবিত হয়ে হুলুঝড়ের শক্তিবৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ করল।
আচম্বিত ধরাশায়ী হওয়ায় তিনজনেরই ধাতস্থ হতে কিছুটা সময় লাগল। কিছুটা সুস্থ হয়ে তিনজনেই উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলেন। আশেপাশে দাঁড়ানো স্বেচ্ছাসেবকেরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের কানে সম্পাদক মশাইয়ের কাতর আবেদন পৌঁছে গেল তাঁদের ধরে তোলার জন্য। রামমন্দিরের অধ্যক্ষ একটু শীর্ণকায় হওয়ার ফলে তাঁর উঠে পড়তে বিশেষ সময় লাগেনি। তিনি ঈষৎ কৃপা মিশ্রিত দৃষ্টিতে সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষের দিকে তাকিয়ে, সম্পাদক মশাইয়ের বিপুল বপু ধরে তোলার চেষ্টা করতে লাগলেন। স্বেচ্ছাসেবকেরা দ্রুত এসে যাওয়ায় এবং তাদের সম্মিলীত প্রচেষ্টায় বেশীক্ষণ তাঁদের ভূলুণ্ঠিত অবস্থায় থাকতে হল না। স্বেচ্ছাসেবকেরা তাঁদের ধরে ধীরে ধীরে মঞ্চের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগলেন।
এই হৈ-হট্টগোলের মধ্যে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান পুরোহিত নিজের ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখার চেষ্টা করছিলেন ঘটনাটা কি হয়েছে। তিনি দেখলেন যে তিনজন ভূমিতে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করছেন। এর আগের ঘটনা তাঁর নজরে আসে নি। তিনি অবাকনেত্রে এই বিচিত্র সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত খেয়াল করলেন এবং স্থির করলেন যে এইখানে যদি প্রতি বছর পূজার দায়িত্ব নিতে হয়, তাহলে তাকেও এই ধরণের সাষ্টাঙ্গ প্রণাম রপ্ত করতে হবে এবং আরও যদি কিছু আড়ম্বর করা যায়, নতুনত্বের খাতিরে সেটাও করতে হবে। তিনি মাসখানেক আগে জলপাইগুড়ির কাছে এক শিবমন্দিরে জলাভিষেক করতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি দেখেছেন যে ঐ মন্দিরের পুরোহিত মশাই নানান রকম বিচিত্র সুরে গান গেয়ে মন্ত্রপাঠ করছেন। তাঁর এই ধরণের মন্ত্রোচ্চারণের জন্য সেখানকার ভক্তকূল তাকে যথেষ্ট সমীহ করে। তিনি তাই স্থির করলেন যে এই প্রাচীন যজ্ঞস্থলে তিনিও তার নিজের কিছু ছাপ রেখে যাবেন। ইতিমধ্যেই তিনি তাঁর ঘন্টা বাজানোর সময় ভক্তবৃন্দের হুলুধ্বনিতে যথেষ্টই পুলকিত এবং রোমাঞ্চিত। প্রতিক্ষণে বাজানোর ইচ্ছা থাকলেও সুবিধা না থাকায়, সুযোগ পেলেই তিনি ভক্তদের হুলুধ্বনি দিতে উৎসাহিত করে চলেছেন।
ওদিকে সম্পাদক মশাই তাঁর বিশিষ্ট অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে বসে জলপান করে একটু সুস্থ বোধ করার পর সভার কাজ শুরু করলেন।
সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষ তাঁর বক্তব্যে ধর্ম নিয়ে যত না বললেন, তার থেকে বেশী বললেন অহেতুক হুলুধ্বনি না দেওয়ার জন্য। তিনি নিয়মিত চণ্ডীপাঠ করে থাকেন। ভক্তদের তিনি বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে এই ভয়ঙ্কর আওয়াজ অন্তরীক্ষে বিচরণকারী ডাকিনী মহারবাকে ডেকে আনে। কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে স্মরণ করে তিনি বললেন যে এই অহেতুক হুলুধ্বনি শুভের থেকে বেশী অশুভ শক্তিকে নিয়ে আসে এবং শুধুমাত্র এই কথাটাই তিনি ভক্তবৃন্দকে বারংবার ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করলেন। তাঁর বাঁহাত এবং কোমড়ে যথেষ্ট ব্যাথার কারণে আরও কিছু কথা বলতে চাইলেও বেশীক্ষণ বলতে পারলেন না। ভক্তেরা চিরদিন শঙ্খ এবং ঘন্টা বাজলেই হুলুধ্বনি দিতে অভ্যস্ত, তাই তারা তাঁর বক্তব্য সঠিক বুঝতে না পারলেও ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানাতে ভুলল না। অধ্যক্ষ মশাই খুশী হয়ে তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন।
সভা চলাকালীন যজ্ঞে কোনও বিরতি না দেওয়ায় সমানভাবে যজ্ঞ, পুজা এবং উদ্বোধনী সভা চলতে থাকল। ঘণ্টা বাজার সঙ্গেসঙ্গে হুলুধ্বনিও চলতে লাগল। একটা প্রচণ্ড কোলাহলের মধ্য দিয়ে যথাবিহীত সম্মানপুরঃসরমিদং যথানাম্নে উদ্বোধনী সভা শেষ হয়ে গেল। কোমড়ের ব্যাথায় কাবু সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষ বেশীক্ষণ আর থাকতে চাইলেন না। খোঁজ করলেন যদি একটা ভোলিনী বা আয়োডেক্স স্প্রে জাতীয় কিছু পাওয়া যায়। সম্পাদক মশাই তাঁর থলিতে অনেক অনুসন্ধান করে কয়েকটি পেন কিলার বড়ি খুঁজে পেলেন। কিন্তু, ডেট অফ এক্সপায়ারী কবে সেটা বোঝা না যাওয়ার জন্য অধ্যক্ষ মশাই সেগুলো খেতে রাজী হলেন না। অধ্যক্ষ মশাইদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বও শালাবাবুর। তিনি এগিয়ে গিয়ে বললেন যে ফিরতি পথে রাস্তায় তিনি ওষুধ কিনে দেবেন। এই শহরের রাস্তা সম্বন্ধে শালাবাবু যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তিনি হাসপাতালের দিকের রাস্তায় না গিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেলেন। সারা রাস্তায় একটি বন্ধ ওষুধের দোকান ছাড়া আর কোনও ওষুধের দোকান পাওয়া গেল না।
শালাবাবু সমস্ত কিছুই দেখেছেন এবং যথেষ্ট পুলকিতও হয়েছেন। যজ্ঞস্থল যে এত ঘটনাবহুল এবং মজাদার হতে পারে তা তিনি তাঁর কল্পনাতেও আনতে পারেন নি, তিনি ভেবেছিলেন এক গুরুগম্ভীর বাতাবরণের মধ্যে তাকে দিন পাঁচেক কাটাতে হবে। কিন্তু, এত সব ঘটনা দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে তাঁর অবসরকালীন জীবনে এই যজ্ঞস্থলে তাকে প্রতি বছর অবশ্যই আসতে হবে বছরভর আধ্যাত্মিক এবং মানসিক জীবনীশক্তি আহরণের জন্য।
ক্রমে প্রায় ঘন্টা দুই সময় কেটে গেল। ঋত্বিক মহারাজ এবার একটু বিরতির সিদ্ধান্ত নিলেন। আহুতি বন্ধ হলেও ব্রতীরা কেউই উঠে পড়ার ব্যস্ততা দেখাচ্ছেন না। প্রথম দিন, এতক্ষণ ধরে বসে বুঝিবা তাঁদের পায়ে ঝিঁঝিঁ লেগে গেছে। ঋত্বিক মহারাজ বুঝলেন এবং নিজেই ওঠার চেষ্টা করলেন, তাঁর দুইপাশে অন্য দুই ব্রতীরাও তাঁকে ওঠার জন্য সাহায্য করতে গিয়ে তিনজনেই তিনজনকে ধরে উঠে পড়লেন। অন্য ব্রতীরাও তাঁদের দেখাদেখি সকলেই একে অন্যকে ধরাধরি করে উঠে পড়লেন।
সম্পাদক মশাই ব্রতীদের সেবার জন্য কোনও কার্পণ্য করেন নি। বিরতির সময় তাঁদের জন্য আছে দুধ দেওয়া চা, আবার দুধ ছাড়াও চা। এছাড়াও ব্রতীদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা চিনিকে চেনেন না, তাঁদের জন্য আলাদা বন্দোবস্ত। আর আছে লেবুর সরবৎ এবং লেবু দেওয়া চা। বেশ কয়েকজন ব্রতীকে দেখা গেল তাঁরা বিরতির সময় উঠে লেবুর সরবৎ খেয়ে আবার যখন যজ্ঞ শুরু করতে যাবেন, তখন আবার দুধ ছাড়া চা খেয়ে যজ্ঞে গিয়ে বসলেন।
বিরতির সময় যজ্ঞমণ্ডপের বাইরে নাটমন্দিরে প্রাণের সঞ্চার হল। চেয়ার টেবিল নিয়ে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক ভক্তদের দান গ্রহণ করছিলেন এবং দেবাদিদেবের ছবি আর স্তব-স্তোত্রের বই বিক্রী করছিলেন। যজ্ঞ দেখতে আসা একজন সাধুবাবা তাদের কাছে গোটাদশেক রুদ্রাক্ষ এবং স্ফটিকের মালা দিয়ে তা বিক্রী করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেন। লাল জোব্বা পড়া আরও একজন সাধুবাবা এসেছেন, কাছেই এক পাহাড়ের উপর তাঁর আশ্রম। ভক্তরা দেখা গেল অনেকেই তাঁকে চেনেন। তারা তাঁকে ঘিরে ধরেছেন। তিনি সেখানেই বসে সবাইয়ের কথা শুনছেন, আর ঝোলা থেকে লাল সূতা বের করে তা পড়ার নির্দেশ দিচ্ছেন, কাউকে বাঁ হাতে, কাউকে ডান হাতে, আর কাউকে বা কোমড়ে। তিনি হাত পেতে কারুর থেকে মূল্য বা দক্ষিণা নেন না বলে, ভক্তেরা পরম ভক্তিভরে প্রণাম করে মূল্যস্বরূপ কিছু দক্ষিণা তাঁর ঝোলার ভিতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন।
হঠাৎই ‘গেল, গেল, ধর, ধর’ আওয়াজে সবাই উচ্চকিত হয়ে দেখতে পেল নতুন পুরোহিত মশাই গড়িয়ে গড়িয়ে প্রায় যজ্ঞকুণ্ডের কাছে পৌঁছে গিয়ে নিজেকে আহুতি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সব সেবকেরা মিলে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে ধরার আগেই তিনি উঠে পড়লেন এবং গম্ভীরভাবে একটু মৃদু হেসে বললেন, “চিন্তার কিছু নেই, আমি সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত করছিলাম।“ যাঁরা তাঁকে ধরতে গিয়েছিল তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন কিন্তু আপনি তো আরেকটু হলে যজ্ঞকুণ্ডে পড়ে যাচ্ছিলেন। তিনি একটু স্মিত হেসে জানালেন যে এই মন্দিরে তিনি প্রথমবার পূজা করছেন, তাই একটু দিক্ভ্রান্ত হয়েছিলেন। এবার সব ঠিক হয়ে যাবে। তিনি আস্তে আস্তে হেঁটে হতবুদ্ধি মণ্ডপের সেবকদের মাঝখান দিয়ে নির্দিষ্ট বিশ্রামঘরের দিকে চলে গেলেন। সেবক এবং অন্যান্য উপস্থিতগন এই ঘটনা চাক্ষুস করে রীতিমত বিভ্রান্ত। তাঁরা কিছুই বুঝলো না।
মন্দির প্রাঙ্গণের বাইরে তখন মেলাই ব্যস্ততা। মেলাতে দোকানীরা দোকানের জন্য সুবিধামত জায়গা পাওয়ার জন্য ক্লাবের সদস্যদের সাথে কথাবার্ত্তা বলছে। মন্দিরে চত্বরে ঢোকার দরজার পাশেই চত্বরের বাইরে জুতা রাখার জায়গা করা হয়েছে। ক্লাবের দুইজন সদস্য সেখানে দায়িত্বে আছেন। এই কাজের দায়িত্ব পাওয়া গেলে ক্লাবের তহবিল বৃদ্ধির সাথে তাদেরও কিছু টু-পাইস আমদানী হয়। যেমন দু’টাকা হিসাবে দুইজোড়া জুতা রাখলে চার টাকা হয়। বেশীরভাগের কাছেই খুচরা পয়সা না থাকায় পাঁচ টাকা দিলে আর এক টাকা ফিরত হয় না। তাই ক্লাবের সদস্যদের খুশী রাখতেই কে কখন সেখানে বসবে, সেই কাজের পালার তালিকা বানানো হয়েছে। কিছু ভক্ত আবার ভিখারিদের কাছেই জুতা গচ্ছিত করে যান। তাহলে তাদের পুণ্যের ঘড়া ভর্ত্তি হয়। মন্দির দর্শনের পর দানকর্ম্মও হল, এবং জুতা রাখার খরচও বাঁচান গেল। কয়েকজন ভিখারির কাছে সিগারেটের প্যাকেটের পিছনে নম্বর লেখা টোকেনও দেখা গেল। বোঝা গেল তারা এই ব্যবসাতে বেশ অভিজ্ঞ।
সূর্য্যদেব ক্রমেই পশ্চিমের দিকে এগিয়ে চলেছেন। মণ্ডপের সকলেই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। সম্পাদক মশাইয়ের আয়ূর্বেদিক চা-পানও রন্ধনশালা’র নেত্রীর তদারকিতে সুশৃঙ্খলভাবে চলছে। ওঁনারও গায়ে কিছু ব্যাথা হয়েছে, কিন্তু ভরসা করে আর পেন কিলার বড়ি খান নি। ওঁনার শালাসাহেব রাম মন্দির এবং সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষদের নামিয়ে দিয়ে, ফেরার সময় রাস টক্স ২০০, আর্ণিকা মন্ট ২০০ আর আয়োডেক্স স্প্রে কিনে এনেছিলেন। এক ঘন্টা অন্তর ঐ দুইটি ওষুধ তিনি তার জামাইবাবুকে নিয়মিতভাবে খাইয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও দ্বিতীয়বার বিরতির সময়ে তিনি তাঁর জামাইবাবুকে স্প্রে করে ভিজিয়ে দিয়েছেন। তাতে তাঁর ব্যাথা অনেকটাই কমে গেছে।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঘন্টাধ্বনির সঙ্গে হুলুধ্বনিও অনেকটাই স্তিমিত হয়ে এসেছে।
আর দেবাদিদেব স্মিতমুখে সব নিরীক্ষন করছেন।
Add comment