সাহিত্যিকা

দুটি গল্প

দুটি গল্প
অনিরুদ্ধ রায়, ১৯৮৩ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং

দিদি তেরা দেবর দিওয়ানা
আমার দুই ভাগ্নী, বড় জনের নাম সুমি, আর ছোটো জনের নাম মিমি। বাহ‍্যিক চেহারা এবং চারিত্রিক দিক থেকে দুজনে পুরো পোলস এপার্ট। বড় জনের হুইটিশ কমপ্লেক্শন, মাঝারি হাইট। ছোট জনের গায়ের রং চাপা আর উত্তুঙ্গে লম্বা, উচ্চতায় পাঁচফুট নয় ইঞ্চি। বড় জন মেধাবী, শান্তশিষ্ট। ছোট জনের পড়াশোনায় কোনো মন নেই, আর ভীষণ দুষ্টু প্রকৃতির।এদের দুজনের বয়সের তফাৎ সাত বছর হলেও নিজেদের মধ‍্যে খুব ভাব। দুই ভাগ্নীই আমার নেওটা তবে ছোটটাই কেন জানি আমার কাছে বেশি প্রিয়। দুষ্টু, অমনোযোগী বলে সে অন‍্য সব গুরুজনদের অনাদরের পাত্রী। তাই হয়ত ওর প্রতি আমার বিশেষ মমতা। ওর সারল‍্য আর মিষ্টি হাসি দেখলে আমার মন বড়ই ভালো হয়ে যায়।

বড় ভাগ্নী এম এ তে ফার্স্ট ক্লাস, অসাধারণ গান গায়, স্কুলের ফাংশনে রবীন্দ্র গীতিনাট্য করে, বাড়িতে সকলের চা বানায়, রান্নাবান্নার হাতও ভালো, মিষ্টি ব‍্যবহার। সব মিলিয়ে আত্মীয়মহলে প্রভূত সুনাম। না চাইতেই তার বিয়ের সম্বন্ধ আসতে লাগলো। এদিকে তারই ছোট বোন মাধ‍্যমিকে কোনো মতে পি ডিভিশনে পাস করে কোনো স্কুলে আর এডমিশন পায় না। শেষে থার্ড লিস্টে নাম উঠল বলে ভর্তি হতে পারলো। বড় মেয়েকে নিয়ে আমার দিদি-জামাইবাবুর যতটাই গর্ব ছোটো মেয়েকে নিয়ে ততটাই সঙ্কোচ।

মুম্বাই প্রবাসী এক সুপ্রতিষ্ঠিত চার্টার্ড একাউন্টেন্টের বাড়ি থেকে বড় জনের বিয়ের সম্বন্ধ এলো। অত‍্যন্ত ভালো পরিবার, সকলেই জ্ঞানে, মানে, প্রতিষ্ঠায় সমাজের প্রথম সারির লোক। মেয়ে অতো দুরে চলে যাবে এই চিন্তায় আমার দিদি জামাইবাবুর প্রথমদিকে একটু খচখচানি ছিলো, কিন্তু এত ভালো পাত্র আর হাতছাড়া করতে চায়নি। বড় মেয়েকে এই পাত্রর সাথেই ঘটা করে বিয়ে দিলো। ছোট মেয়েকে বাড়ি শুদ্ধু সবাই বোঝালো, দিদির বিয়েতে যেন ভদ্র হয়ে থাকে, অসভ‍্য মেয়ের মতো বরযাত্রীদের সমনে যেন নাচানাচি না করে।

বড়দের কথামতই আমার ছোট ভাগ্নী একটা সাদা লাল পাড় শাড়ি জোগাড় করে বাঙালী বঁধুর সাজে দিদির বিয়েতে সবার তদারকি করলো। শুধু শাড়ি নয়, বেশ কিছু অরিজিনাল আর ইমিটেশন গয়নাতেও সাজলো। নাকে নথ, আর কপালে টিকলি-টায়রা। ঐ শাড়ি গয়নার সাজে ওকে দেখে সকলেই অভিভুত। আর দিদির অতি মেধাবী, পিসতুতো দেওর সেই ঢ্যাঙা মিমিকে দেখে তো আর চোখই ফেরাতে পারে না। মিমিকে দেখে তখন তার ওয়ার্ল্ডের টপ ক্লাস মডেল, কেন্ডল জেনরের সমগোত্রীয় মনে হচ্ছে। সে তার মডেল সঙ্গীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনায় বেচারা অনভিপ্রেত হেঁদিয়ে আধমরাই হয়ে গেলো। তার ইংরেজি ঘেঁষা আনইম্প্রেসিভ আলাপ জমানোর প্রচেষ্টায় মিমি জল ঢেলে দিয়ে বলে – তুমি বাংলায় কথা বললে আমি তোমাকে পাত্তা দিতে পারি। ছেলে তখন তার মগজস্থ বাংলা কবিতার ভাণ্ডার হাতরিয়ে “হাট্টিমাটিম টিম” ছড়াটাই বার তিনেক শুনিয়ে দিয়ে বললো, “কয়েকটা বাংলা পোয়েট্রি তুমি আমায় শিখিয়ে দাও না, প্লীজ্?”

বিয়ের মালা বদল অনুষ্ঠানের আগে মিমি তার দিদির কানে কানে বলে – দিদি তেরা দেবর দিওয়ানা।
সুমি ঘাবড়ে গিয়ে বলে – এই, তুই কিছু গড়বড় করে বসিস না, পটাই আই আই টি,পাওয়াইয়ের কম্পুটার সাইন্সে চান্স পাওয়া ছেলে। ওরকম ঘ্যামা ভালো ছেলের সাথে তোর পটবে না আমি আগেই কিন্তু বলে দিলাম। ওদিকে একদম ভেড়ার চেষ্টা করবি না। তাহলে আমারই লজ্জায় মাথা কাটা যাবে ।
এই শুনে মিমি গিয়ে পটাইকে বলে দিলো – এই শোনো, তুমি পড়াশোনায় বড্ড বেশি ভালো ছেলে। আর আমি টায়ে টায়ে পাস করি। তোমার সাথে আমি মিশবো না।
পটাই সকাতরে বলে – আমি কিন্তু ক্লাস সেভেনে ভুগোলে ফেল করেছিলাম। আর এই ফার্স্ট সেমেও গেঁড়াতে পারি।
মিমি অবাক। তার জন্য একটা ভালো ছেলে পরীক্ষায় ইচ্ছে করে ফেল করবে? তখন বলে
– ঠিক আছে, আগে গেঁড়াও তো। তারপরে আমি দেখছি। পরে কিন্তু বলতে পারবে না, যে আমার জন্যই তুমি গেঁড়িয়েছো।

পটাইয়ের কাছে এই মডেল গার্ল এতটাই ইম্পরটেন্ট যে সে ক‍্যারিয়ার শিকেয় তুলে ফার্স্ট সেমেস্টারে কয়েকটা পেপারে ইচ্ছে করেই গেঁড়িয়ে বসলো। সেই নিয়ে পিসির বাড়িতে প্রবল অশান্তি। বাড়ির সকলের ধারণা এই ছেলে বিয়েবাড়িতে সেই শাঁকচুন্নীকে দেখার পর থেকেই বিগড়েছে। পরিস্থিতি দেখে-বুঝে সুমিরও খুব টেনশন। সে তার বোনকে ফোন করে বললো- ওরে লক্ষীছাড়া ,তুই এই ভালো ছেলেটার মাথা খাস না। তুই ওকে বুঝিয়ে বল পড়াশোনায় মন দিতে।
মিমি বলে – ধ‍্যাৎ আমি মাথা খাওয়ার কে? তাছাড়া আমি নিজেই তো পড়াশোনা করি না। ওকে পড়াশোনায় ভালো হওয়ার কথা আমি কি করে বলি?
– একটা কিছু কর আমার লক্ষী বোন, ফার্স্ট ইয়ারে ফেল করলে ওদের কলেজ থেকে তাড়িয়ে দেয়। তখন জুহু বীচে মুম্ফলি বেচা ছেলেকে কি তোর ভালো লাগবে?
– আরে বাঃ? খারাপ কেন লাগবে? মুম্ফলি ভালো করে বেচতে পারলে খারাপ কী?
– আরে আমার পাগলি বোন। ওর মা-বাবার কথাটা ভাববি না? আমার কথা প্লিজ শোন, ও গরমের ছুটিতে কোলকাতায় যাবে। তুই ওকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে লেখাপড়ায় ফেরা।
– ঠিক আছে। এত করে যখন বলছিস তখন ওকে একবার বুঝিয়ে বলবো।

গরমের ছুটিতে মিমি ওকে ডেকে বোঝালো – এই শোনো। ফেল, টেল তো খুব হলো। এবার পড়াশোনা করে দেখাও তো তোমার ভালো পাশ হয় কিনা? তুমিও পড়, তাহলে আমিও পড়ি।
পটাই আতঙ্কিত হয়ে বলে – আমি পড়লে তো পাশ করে যাব, কিন্তু তুমি?
– সে আমি স্কুটার চালাতে জানি, ফেল করলে সুইগির ডেলিভারি গার্ল হয়ে যাব। কিন্তু তুমি তো ভালোভাবে মুম্ফলিও বেচতে পারবে না।
মিমি সুইগির ডেলিভারি গার্ল হয়ে যাবে? পটাইএর এতে ঘোর আপত্তি। একটু চিন্তা করে জবাব দিলো
– তা ঠিক, তবে ব‍্যাপারটা একটু রিস্কি হয়ে যাবে না?
– আরে বাবা। ঘাবড়াচ্ছ কেন, আমিও একটু চেষ্টা করে পড়ে দেখি না? আগে তো পড়াশোনা করা প্রয়োজনীয় মনে হয়নি। এবার না হয় তোমার জন‍্য একটুখানি পড়ি।

পটাই সেকেন্ড ইয়ারে উঠে গেলো, মিমিও হায়ার সেকেন্ডারিতে ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করে সাইকলজিতে অনার্স নিয়ে কলেজে ভর্তি হলো। তারপর এখন বিয়ে করে দুজনে সিডনিতে থাকে, দুজনেই নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠিত। ওদের এক ছেলে, এক মেয়ে। তাদের বাপ, মায়ের দেওয়া শিক্ষা হলো, যা করতে মন চায় ভালোবেসে তাই কর বাপু। এতে প্রাথমিকভাবে অসফল হলেও লেগে থাক।

আর তাছাড়াও জীবনে একবার ফেল করাটাও খুব দরকার নাহলে সাফল‍্যের আনন্দ পাওয়া যায় না।

******************

রসায়ন ও অঙ্ক
তপনবাবু মাঝবয়সী ব‍্যাচেলার, ঘোর নাস্তিক এক ব‍্যক্তি। পেশায় হাই স্কুলের অঙ্কের মাস্টার, আর প‍্যাশন অঙ্ক। জীবনের সব সমস‍্যাকে সমীকরণে ফেলে অঙ্ক কষে পদক্ষেপ ফেলে। তপনের বিয়ের যে চেষ্টা হয়নি সেরকম কিন্তু নয়, মা বেঁচে থাকতে অনেক চেষ্টাই করেছিলেন। একটা সম্বন্ধ অনেকদূর এগিয়েওছিল। কিন্তু তপন শেষমেশ অঙ্ক কষে দেখলো যে মেয়ের অনেক সমস‍্যা। আসানসোলের স্কুলে সেলাইয়ের দিদিমণি, বিয়ের পরে কোলকাতা থেকে ডেইলি প‍্যাসেঞ্জারি করে স্কুল করা কি সম্ভব? মেয়েটি বেশ ভক্তিমতি। তার ওপর মা অসুস্থ, আর অনেকগুলো ভাইবোন, বাপের ফ‍্যামিলিও সাপোর্ট করতে হবে। তপনের পক্ষেও বৃদ্ধা মাকে ছেড়ে আলাদা সংসার পাতা সম্ভব নয়‌। দুজনের জীবনের ফ‍্যাক্টর গুলো বেশ পরস্পর বিরোধী।

তবে মেয়েটি বেশ। এ যদি ডিনোমিনেটর হয় আর তপন যদি নিউমারেটর হয়ে ওপরে চেপে বসতে পারে তো ফলাফল অবধারিত গ্ৰেটার দ‍্যান ওয়ান। কিন্তু যদি উল্টোটা হয় তাহলে ভগ্নাংশের গ‍্যাঁড়াকলে অবধারিত পড়তে হবে। তাই মেয়েটার সাথে দেখা করে বলল – আমাদের দুজনের জীবনের ফ‍্যাক্টরগুলো তো বেশ জটিল, সেই জন‍্য বলছিলাম,আগে থেকে যদি একটু কমপোনেনডো – ডিভিডেন্ডো করে বোঝা যায়।
মেয়েটি অবাক হয়ে জানতে চাইল- সে কী রকম?
– ঐ বিয়ের আগে একটু ঘনিষ্ঠ ভাবে মিশে সমাধানের সম্ভবনা দেখে নিয়ে বিয়ে করলে ভালো হয় না?
মহিলা যথারীতি এহেন অঙ্ক সন্ধিৎসু পাত্রের হাতে নিজেকে চিরজীবনের জন্য সঁপতে রাজি হয়নি।

তপনের মাকে তাঁর বিশ্বস্ত পুরোহিত বুঝিয়েছিল একটা শান্তি-স্বস্ত‍্যয়নের সাথে কম্বাইন্ড্ শনি পুজো করতে পারলে তপনের একটা হিল্লে হতে পারে। তাই এক শনিবার তপনের অজ্ঞাতে উনি পুজোর ব‍্যবস্থা করলেন, কিন্তু তপন জানতে পেরেই বাড়িতে পৌঁছে পুরুত ঠাকুরকে দুটো সস্তার কনডম দিয়ে বলে – এই নাও ভটচাজ, তোমার দক্ষিণা, আর এটা নিয়ে বিদেয় হও। পাঁচালীতে লেখা আছে সোয়া পাঁচ আনা দক্ষিণা। এখন সোয়া পাঁচ আনা আর পাই কোথায়? তাই এইটাই রাখো।,ষষ্টির কৃপায় তো পাঁচ ছেলে-মেয়ের বাপ হয়েই গেছো। এইটা এখন তোমার খুব কাজে লাগবে।
ভটচাজ বেদম চটে অভিশাপ দিয়েছিল – তোর শালা কোনোদিন বিয়ে হবে না,দেখে নিস।
সেই অভিশাপের জোরে তপন অবিবাহিতই থেকে গেল। ইতিমধ‍্যে মাও গত হয়েছেন তাই ওকে উত‍্যক্ত করারও কেউ রইল না। তপন অবশ‍্য বেশ আছে।

তপন রোজ সকালে পার্কে হাঁটতে যায়। একদিন দেখে দুটি বাচ্চা মেয়ে ব‍্যাডমিন্টন খেলছে। পাঁচ পাক হেঁটে তপন মেয়ে দুটোর সামনের বেঞ্চে বসে খেলা দেখতে লাগলো। বেশ মিষ্টি মেয়ে দুটো। একবার শাটলককটা ছিটকে তপনের কাছে চলে আসতেই একটা মেয়ে বলে – মেসোমশাই, ককটা দাও না?
মেসোমশাই ডাকটা তপনের কানে কেমন যেন বাজল। আজকালকার ছেলে-মেয়েরা তো কাকু বা আঙ্কেল বলে ডাকে। মেসোমশাই তো তপনরা ছোটোবেলায় বন্ধুর বাবাদের বলত। ককটা তুলে ওদের দিকে ছুঁড়ে দিল‌। আবার খেলা চলতে লাগলো। তপনের মনে হলো একটা কিছু যেন মিলছে না।

একটু বাদে এক মাঝ বয়সী সুদর্শনা মহিলা এসে তপন বাবুকে জিজ্ঞেস করলেন – আমি এখানে বসতে পারি?
তপন বাবু সম্মতি সূচক মাথা নাড়তে মহিলা বেঞ্চের আর এক কোনায় বসে পড়লেন।
তপনের মনে হলো বাহ্ বেশ স্মার্ট,সপ্রতিভ মহিলা তো!
আবার ককটা তপনের পায়ের কাছে এসে পড়ল। এবার অন‍্য মেয়েটা বলে- পিসেমশাই ককটা দাও না।
তপন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল – ও মেসোমশাই ডাকছে, তুমি কেন পিসেমশাই ডাকছ?
মেয়েটা কিছু বলার আগেই ভদ্রমহিলা পাশ থেকে বললেন- বুঝতে পারলেন না? ওরা মামাতো-পিসতুতো বোন তাই এ যাকে মেসোমশাই ডাকে ও তাকে পিসেমশাই ডাকবে।
তপন ভেবে দেখলো- বাহ্ , ঠিক লজিক তো! একদম অঙ্ক মিলে গেল ! কিন্তু কোথায় যেন একটা খটকা আছে?
তপন মহিলাকে বললো – কিন্তু আগে একজন মাসি, পিসি না থাকলে মেসো, পিসে কি করে হবো?
মহিলা হেসে বললেন – সে নেই বুঝি?

মহিলার ঝিলিক হাসিতে তপন পুলকিত হয়ে উঠে করলো – আপনি কি কাছেই কোথাও থাকেন?
– হ‍্যাঁ, কাঁসারি পাড়ায় থাকি।
– আপনি কী করেন?
– আমি স্কুলে পড়াই।
– বাহ্, বেশ তো। আমিও তো স্কুলে পড়াই। আপনার কোন সাবজেক্ট?
– কেমিস্ট্রি। আপনার?
– অঙ্ক। ইয়ে, আপনি কি বিবাহিতা?
– আমি ডিভোর্সী।

মহিলা হঠাৎ সালোয়ারের পকেট থেকে একটা বাঁশি বার করে জোরে হুইসেল বাজিয়ে দিতেই মেয়ে দুটি খেলা বন্ধ করে দিলো। একটা মেয়ে বলল – মাসি, প্লিজ, আর পাঁচ মিনিট।
তপন বলল – মেয়ে দুটো বেশ তো খেলছিল, আপনি বাঁশি বাজিয়ে ওদের থামিয়ে দিলেন কেন ?
মহিলা বললেন – আপনি আমার দিকে বড্ড ঘেঁষে আসছিলেন। তাই ঘাড়ের ওপর পড়ার আগেই বাশি বাজিয়ে দিলাম।
তপন সলজ্জে বলে – ওহ্ সরি, সরি। আসলে আপনাকে দেখে না, আমার খুউব ভালো লেগেছে। তাই অজান্তেই অনেক কাছাকাছি চলে এসেছি। ইয়ে, আমি রোজ সকালে পার্কে হাঁটতে আসি।
মহিলা বললেন- আমি মাঝে সাঝে এই ভাইঝি-বোনঝি দুটোকে নিয়ে আসি।

মেয়ে দুটিকে নিয়ে মহিলা চলে গেলেন। তবে তপনবাবুর প্রবাবিলিটির অঙ্ক মিলে গেল। প্রায় রোজই মহিলা পার্কে আসতে লাগলেন। বাঁশিটাও এখন দেরিতেই বাজে।
এদের পঁয়ল্লিশ-ছেচল্লিশ কী আর এমন বয়স। রোমান্স তো হতেই পারে, বিশেষ করে পেশায়, ভাবে আর কেমিস্ট্রিতে যখন এতটাই মিল।
এরপর ভটচাজ পুরহিতের সেই অভিশাপটা আর ফলেনি কারণ শকুনের শাপে গরু মরে না।

Sahityika Admin

1 comment